বিএনপি কর্মীকে হত্যা মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি গ্রেপ্তার-তারভীর আরাফাত
আব্দুস সবুর:
বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার মামলার প্রধান আসামি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ১২টার দিকে তাকে আদালতে নেয়া হয়েছে। উপ পুলিশ কমিশনার তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত।তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়।বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শিহাবুর রহমান শিহাব বলেন, সাবেক এসপি তানভীর আরাফাত পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।তার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা রয়েছে।কিভাবে কোথায় থেকে কখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেন নি পুলিশের এই কর্মকর্তা।গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন।মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০-১২ জনকে।নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে।মামলার বাদী সুজন হোসেন কুষ্টিয়া শহরের মিললাইন এলাকার লালন শাহ সড়কের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।মামলার বাদী সুজন হোসেন এজাহারে উল্লেখ করেছেন,আমার দলীয় ছোট ভাই বিএনপির সহযোদ্ধা সুজন মালিথা নিয়মিত বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রামে উপস্থিত থেকে নেতাকর্মীদের উৎসাহ প্রদান করতো।যার কারণে আসামিদের কাছে সুজন মালিথা শত্রু হিসেবে পরিণত হয়। আসামিরা আমার দলীয় ছোট ভাইকে হত্যার ষড়যন্ত্র করতে থাকে।তারই জের ধরে আমার দলীয় ছোট ভাই সুজন মালিথা বিএনপির প্রোগ্রাম শেষ করে রাতে নিজ বাড়িতে প্রবেশ করলে ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১২টা ২০ মিনিটে আসামিরা সকলে মিলে আমার দলীয় ছোট ভাইয়ের বাসায় প্রবেশ করে এবং তাকে জোরপূর্বক তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাতস্থানে চলে যায়।পরবর্তীতে আমিসহ সুজন মালিথার পরিবারের লোকজন তাকে দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে এলকাবাসীর মাধ্যমে জানতে পারি যে,পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উল্লেখিত আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে আমার দলীয় ছোট ভাই সুজন মালিথাকে বাসা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ৩০ মিনিটে কুষ্টিয়া মডেল থানাধীন মোল্লাতেঘরিয়া পূর্ব ক্যানালের পাড়ে গুলি করে হত্যা করেছে।অতপর আমিসহ সুজন মালিথার পরিবারের লোকজন আসামিদের কাছে উপস্থিত হয়ে সুজন মালিথাকে হত্যার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা কোনো সদুত্তর না দিয়ে আমাদের তাড়িয়ে দেয়।পরবর্তীতে একাধিকবার উক্ত ঘটনার বিষয়ে মামলা করার চেষ্টা করলে আসামিরা আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়। ঘটনার বিষয়ে এলাকার অনেকেই অবগত আছেন।এমতাবস্থায় ঘটনার বিষয়ে সুজন মালিথার পরিবারসহ দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে থানায় এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হয়।আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাত, কুষ্টিয়া মডেল থানার সাবেক ওসি নাসির উদ্দিন,একই থানার সাবেক ওসি এ কে এম মিজানুর রহমান,ওই থানার সাবেক এসআই সাহেব আলী,এসআই মোস্তাফিজুর রহমান,কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ,সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, দৌলতপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান টোকন চৌধুরী,কুষ্টিয়া নাগরিক পরিষদের সভাপতি এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) চেয়ারম্যান সাইফুদ্দৌলা তরুনসাইফুদ্দৌলা তরুন (৪৮), কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব (৪৫), কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মহিদুল ইসলাম,ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ আরিফুর হোসেন সজীব, কুষ্টিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কৌশিক আহমেদ ওরফে বিচ্ছু,জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি সোহাগ আলী।কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, আমি খুলনায় আছি।একটা মিটিংয়ে আছি। এবিষয়ে তিনি কিছু না বলে মোবাইলটি কেটে দেন।এবিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ ও আদালত পুলিশের ওসিকে কল দিলেও তারা রিসিভ করেন নি।