কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী ও ইবি থানা এলাকা হতে গরুচুরি চক্রের আসামী গ্রেফতার ও চুরিকৃত গরু উদ্ধার- পুলিশ সুপারের প্রেস বিজ্ঞপ্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুষ্টিয়া জেলারকুমারখালী ও ইবি থানা এলাকা হতে গরু চুরির ঘটনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে আন্তঃজেলাসংঘবদ্ধ গরু চোর চক্রের আসামী গ্রেফতার ও চুরিকৃত গরু উদ্ধারঃ ঘটনা-১বাদী সুদেব দত্ত (৪৫), পিতা-সুধির কুমার দত্ত, সুবির কুমার দত্ত, সাং- কয়া, থানা-কুমারখালী, জেলা- কুষ্টিয়া তারবাড়ীতে গরু লালন পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে। তার বাড়ীতে ১টি ফ্রিজিয়ান গাভী ও ২টিবকন বাছু ছিল। ইং ০৬/০৩/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ০৩:০০ ঘটিকার সময় বাদী তার গরু ০৩টিকে খাবার দিয়ে এসে ঘুমিয়ে পড়ে। অতপর ইং ইং ০৬/০৩/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ০৭:০০ ঘটিকারসময় ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরে দিকে গিয়ে দেখতে পাই যে, তার গোয়াল ঘরের দরজা খোলা এবংগোয়ালঘরে ৩টি গরু নাই। যার অনুমান মূল্য ২,৬০,০০০/- টাকা। থানায় হাজির হয়ে বাদী লিখিতএজাহার দায়ের করলে এ ঘটনায় কুমারখালী থানার মামলা নং-১২, তারিখ-১২/০৩/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩৭৯ পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু হয়। কুমারখালী থানা পুলিশ মামলারঘটনায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতার ও চোরাইকৃত গরু উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন ভাবে অভিযান ও সোর্স নিয়োগ করে। সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, একটি সঙ্গবদ্ধ আন্তঃজেলাগরু
চোর সিন্ডিকেট ট্রাকে করে গরু চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। আসামীরা বিভিন্ন জেলার যে এলাকায়চুরি করে, দিনের বেলায় তারা গরুর ব্যাপারির ছদ্মবেশে রেকি/পর্যবেক্ষণ করে এবং যে এলাকায়চুরি করবে সে এলাকার একজন ড্রাইভার সহ ২/৩ জন জড়িত থাকে। এলাকায় প্রবেশের পর সেই এলাকারড্রাইভারের কাছে আগে থেকে গাড়ি হস্তান্তর করে দেয় এবং সঙ্গবদ্ধ চোর চক্র এলাকার ভিতরেপ্রবেশের পূর্বের ব্যাপারি সেজে গরু কেনার নামে টার্গেটকৃত গোয়ালে কার্টার দিয়ে লোহার শিকল/তালা কেটে গরু বের করতে থাকে এবং ট্রাকের ড্রাইভারকে ফোন দিয়ে গোয়ালের কাছে ডেকেনেয়। গরু ট্রাকে উঠায়ে সুবিধা মতো পথে ফরিদপুর জেলাধীন সদরপুর থানার সাতরশি গ্রামেরসুরুজ মোল্লা, পিতা-কালামিয়া মোল্লা, সাং-সাতরশি, থানা-সদরপুর, জেলা-ফরিদপুর এর বাড়িতেনিয়া যায়। সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারি যে, গত ইং ১০/০৫/২০২৩ তারিখ দিবাগত রাতে গরুচুরি করার উদ্দেশ্যে ফরিদপুর এবং রাজবাড়ী হতে সঙ্গবদ্ধ চোরচক্র কুমারখালী থানা এলাকায়ট্রাক নিয়া আসতেছে। এই সংবাদ পেয়ে সঙ্গবদ্ধ চোর চক্রকে গ্রেফতারের জন্য কুমারখালী থানারঅফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে কুমারখালী থানা পুলিশের একটি চৌকস দল কুমারখালী থানাধীনগুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে/এলাকায় অবস্থান করে। গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারেন ০৬ জন চোর এবং ট্রাক কুষ্টিয়া জেলার সদর থানাধীন বটতৈল এলাকায় অবস্থান করছে। ইং ১০/০৫/২০২৩তারিখ রাত অনুমান ০৩:৩০ ঘটিকার সময় অফিসার ইনচার্জ, কুমারখালী থানা সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ বটতৈল এলাকার কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, কুষ্টিয়ার সামনে গিয়েট্রাক সহ আসামী ১। মোঃ শিমুল মোল্লা (৩২), পিতা-মৃত হারুন মোল্লা, সাং-মীরের চর (মুরারিয়ারচর), ইউনিয়ন-ময়না, থানা-বোয়ালমালী, জেলা-ফরিদপুর, ২। মোঃ জসিম ব্যাপারি (৩৫), পিতা-মৃতজয়নাল ব্যাপারি, সাং-পাড়াগ্রাম, ইউনিয়ন-শিমুলিয়া, থানা-শিবালয়, জেলা-মানিকগঞ্জ, ৩।মোঃ এনামুল হক (৪০), পিতা-মোঃ সামাদ মন্ডল, সাং-চকতিলন, ইউনিয়ন-আলমপুর, থানা-ধামুইরহাট,জেলা-নওগাঁ, ৪। মোঃ আলমগীর শেখ (৫০), পিতা-মোঃ সোহরাব শেখ, সাং-সাতৈর পাটিতাপাড়া, ইউপি-সাতৈর,থানা-বোয়ালমারী, জেলা-ফরিদপুরদের একটি নীল রংয়ের ট্রাক সহ গ্রেফতার করে। আসামীদের গ্রেফতারকালেতাহাদের নিকট হতে চুরির কাজে ব্যবহৃত তালা/শিকল কাটার মেশিন (কার্টার),দড়ি, ছাতা, এবংবিভিন্ন ব্রান্ডের (বাটন) ০৩ টি মোবাইল উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিকজিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, বিভিন্ন এলাকা হতে চোরাইকৃত গরু সুরুজ মোল্লা, পিতা-কালামিয়ামোল্লা, সাং-সাতরশি, থানা-সদরপুর, জেলা-ফরিদপুরের বাড়িতে নিয়ে তারা যোগসাজসে চোরাইকৃতগরুগুলো বিক্রয় করে। সুরুজ মোল্লার বাড়িতে চোরাইকৃত গরু আছে, এখন গেলে চোরাই গরু পাওয়াযাবে। তাৎক্ষণিক চোরাই গরু উদ্ধার ও আসামী গ্রেফতারের জন্য গ্রেফতারকৃত আসামী সহ সদরপুরথানা, ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করে। সুরুজ মোল্লা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়েগেলে তার গোয়াল ঘর হতে চোরাইকৃত ০১ টি গাভি গরু, যার মূল্য অনুমান ১,৩০,০০০/- ও ০১টি বকন গরু, যার মূল্য অনুমান ৬০,০০০/-, সর্বমোট ০২ টি গরু উদ্ধার করা হয়। ঘটনা-২বাদী মোঃ ইকলাছ হোসেন (৪০),পিতা-মোঃ ছকির উদ্দিন, সাং-আড়পাড়া, থানা-ইবি, জেলা-কুষ্টিয়া ইং-১০/০৫/২০২৩ তারিখে রাতঅনুমান ০০.১০ ঘটিকার সময় বাদী গোয়ালের গরুর খাবার দিয়ে ঘুমাতে যান। ইং-১০/০৫/২০২৩ তারিখরাত অনুমান ০২.২০ ঘটিকার সময় বাদী গোয়াল ঘরে গরুর খাবার দিতে গিয়ে দেখেন বাদীর গোয়ালঘরে বাদীর ০১টি শিয়ালি রংয়ের বড় ষাঁড় গরু নাই, যার ০২টি শিং আছে প্রতিটি শিং লম্বাঅনুমান ৪ ইঞ্চি। পরবর্তীতে বাদী তার পরিবারের লোকজনকে জানালে সকলে গরু খোঁজার জন্যএলাকার মধ্যে বাহির হয়। স্থানীয় লোকজনের সাথে বাদী তার চুরি যাওয়া গরু টি খোঁজাখুঁজিকরাকালে ইং-১০/০৫/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় ইবি থানাধীন ঝাউদিয়া গ্রামস্থশ্মশানপাড়া ০১নং আসামী মোছাঃ লিপি খাতুন (৩৮) বসত বাড়ির গোয়াল ঘরের ভিতরে বাদী তারচুরি যাওয়া গরু দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। বাদী ০১নং আসামী লিপি খাতুনকে তারবাড়িতে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন যে, ০২ নং হতে ০৪ নং আসামী অন্যান্য পলাতকআসামীদের সহায়তায় বাদীর গোয়াল ঘর হতে কৌশলে গরু চুরি করে নিয়ে যায়। থানায় বাদীর লিখিতঅভিযোগের ভিত্তিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার মামলা নং- ০৮, তারিখ- ১০/০৫/২০২৩ খ্রিঃ,ধারা- ৩৮০/৪৬১/৪১১ পেনাল কোড রুজু করা হয়। ইতিমধ্যে ইবি থানা পুলিশঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার বিস্তারিত শুনে ০১নং আসামী মোছাঃ লিপি খাতুন (৩৮), স্বামীমোঃ আশরাফুল আলম, সাং-মনোহরদিয়া, এ/পি সাং-ঝাউদিয়া শ্মশানপাড়া, থানা-ইবি, জেলা-কুষ্টিয়া’কেতার নিজ বসত বাড়ী হতে গ্রেফতার করা হয়। আসামীর দেখানো মতে তার গোয়াল ঘর হতে ০১টি শিয়ালিরংয়ের বড় ষাঁড় গরু যার মূল্য অনুমান ২,০০,০০০/- টাকা ইং-১০/০৫/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান১১.৩০ সময় উদ্ধার পূর্বক জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করেন ও নিজ হেফাজতে নেন। ধৃত ০১নং আসামীকেজিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় ০২ হতে ০৪ নং আসামীর অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামীদের সহায়তায় বাদীরগোয়াল ঘরে কৌশলে রশি কেটে প্রবেশ করে গরু চুরি করে নিয়ে এসে তার হেফাজতে রেখেছে পালিয়েগেছে। বিষয়টি অদ্য ১১/০৫/২০২৩তারিখ জনাব মোঃ খাইরুল আলম, সুযোগ্য পুলিশ সুপার, কুষ্টিয়া মহোদয় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষেপ্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে নিশ্চিত করেন।